ষষ্ঠ শ্রেণি - ইসলাম ও নৈতিক শিক্ষা (৩য় অধ্যায়) সৃজনশীল প্রশ্ন
ষষ্ঠ শ্রেণির ইসলাম ও নৈতিক শিক্ষা ৩য় অধ্যায় সৃজনশীল প্রশ্ন
আব্দুর রহিম সুললিত কণ্ঠের অধিকারী। তিনি অশুদ্ধভাবে তাড়াতাড়ি কুরআন তিলাওয়াত করেন। অপরপক্ষে তার সহপাঠী আব্দুল করিমের কণ্ঠস্বর সুমধুর নয়। কিন্তু তিনি দেখে ধীরে ধীরে ও সুস্পষ্টভাবে তিলাওয়াত করার আপ্রাণ চেষ্টা করেন।
ক. আল-কুরআনের অবতীর্ণ পূর্ণাঙ্গ প্রথম সূরা কোনটি?
খ. ‘হে আমার প্রতিপালক! আমাকে জ্ঞানে সমৃদ্ধ কর’ আয়াতটি ব্যাখ্যা কর।
গ. আব্দুর রহিমের কুরআন তিলাওয়াতে শরিয়তের কোন বিধানটি পালন হয়নি? ব্যাখ্যা কর।
ঘ. আব্দুল করিমের কুরআন তিলাওয়াতের পদ্ধতিটি পাঠ্যবইয়ের আলোকে বিশ্লেষণ কর।
প্রশ্নের উত্তর
ক. আল-কুরআনের অবতীর্ণ প্রথম পূর্ণাঙ্গ সূরা হচ্ছে সূরা আল-ফাতিহা।
খ. ‘হে আমার প্রতিপালক! আমাকে জ্ঞানে সমৃদ্ধ কর।’— এ আয়াতটি দ্বারা জ্ঞান অর্জনে আল্লাহর সাহায্য চাওয়া হয়েছে। আলোচ্য আয়াতটি আল-কুরআনের সূরা ত্ব-হার ১১৪ নম্বর আয়াত। এতে জ্ঞান বৃদ্ধির জন্য মুনাজাত করার কথা বলা হয়েছে। মূলত জ্ঞানার্জন করা প্রত্যেক মুসলমানের জন্য ফরজ। কেননা শিক্ষা ও জ্ঞানের মাধ্যমে আমরা আল্লাহ তায়ালাকে চিনতে পারি। জ্ঞানীরাই আল্লাহ তায়ালাকে বেশি ভয় করে। আর জ্ঞানে সমৃদ্ধ হওয়ার জন্য আল্লাহর সাহায্য প্রয়োজন।
গ. আব্দুর রহিমের তিলাওয়াতে তাজবিদের বিধানটি পালন করা হয়নি। তাজবিদ শব্দের অর্থ উত্তম বা সুন্দর করা। আল-কুরআনের আয়াতসমূহকে সুন্দর ও শুদ্ধ করে পড়াকে তাজবিদ বলা হয়। অর্থাৎ আল-কুরআনের প্রতিটি হরফকে মাখরাজ ও সিফাত অনুসারে বিশুদ্ধভাবে তিলাওয়াত করাই হচ্ছে তাজবিদ। তাজবিদ সহকারে কুরআন পড়া ওয়াজিব বা আবশ্যক। যা আব্দুর রহিমের তিলাওয়াতে অনুপস্থিত। আব্দুর রহিম সুললিত কণ্ঠে কুরআন তিলাওয়াত করলেও তিনি তাজবিদের মাখরাজ এবং সিফাত অনুযায়ী কুরআন তিলাওয়াত করেননি। তিনি অশুদ্ধভাবে তাড়াতাড়ি তিলাওয়াত করেন। তাই তার তিলাওয়াতে তাজবিদের বিধানটি পালিত হয়নি।
ঘ. আব্দুল করিমের কুরআন তিলাওয়াতের পদ্ধতিটি একটি উত্তম ইবাদত। আল-কুরআন দেখে দেখে পড়া হচ্ছে নাযিরা তিলাওয়াত। যা আল্লাহর দরবারে একটি উত্তম ইবাদত হিসেবে পরিগণিত হয়। কুরআন মজিদ দেখে দেখে অথবা মুখস্থ যেভাবেই পাঠ করা হোক তাতে পুণ্য রয়েছে। তবে কুরআন মজিদ দেখে দেখে পাঠ করলে অধিক সওয়াব লাভ করা যায়। আব্দুল করিমের কণ্ঠস্বর সুমধুর নয়। কিন্তু তিনি দেখে ধীরে ধীরে ও সুস্পষ্টভাবে কুরআন তিলাওয়াত করার আপ্রাণ চেষ্টা করেন। আর সুস্পষ্টভাবে কুরআন তিলাওয়াত করলে কুরআন আল্লাহর নিকট কিয়ামতের দিন তিলাওয়াতকারীর জন্য সুপারিশ করবে। সুতরাং বলা যায়, আব্দুল করিমের দেখে ধীরে ধীরে ও স্পষ্টভাবে কুরআন মজিদ পাঠ করার গুরুত্ব অপরিসীম। এভাবে কুরআন তিলাওয়াত তার জন্য আখিরাতে কল্যাণ বয়ে আনবে। আমাদের উচিত যথানিয়মে কুরআন তিলাওয়াত করা।
Source- courstika