ষষ্ঠ শ্রেণি - ইসলাম ও নৈতিক শিক্ষা (২য় অধ্যায়) সৃজনশীল প্রশ্ন
ষষ্ঠ শ্রেণির ইসলাম ও নৈতিক শিক্ষা ২য় অধ্যায় সৃজনশীল প্রশ্ন
শরীফ ও আরিফ সহপাঠী। শরীফ পাঁচ ওয়াক্ত নামাযসহ সব ধরনের ইবাদত করার চেষ্টা করে। সে অনেকবার আরিফকে নামাযে আহ্বান করেছে, কিন্তু আরিফ বিভিন্ন অজুহাত দেখিয়ে নামায পড়া থেকে বিরত থেকেছে। শরীফ যখন আরিফকে ইবাদতের কথা বলে তখন আরিফ বলে, — ‘শুধু যে আমি একা ইবাদত করি না তাতো নয়। অনেকেই তো আছে যারা কোনো প্রকার ইবাদত করে না। তাদের যা
হবে আমারও তাই হবে’।
ক. ইবাদত শব্দের অর্থ কী?
খ. আমাদের পবিত্র থাকা প্রয়োজন কেন? ব্যাখ্যা কর।
গ. উদ্দীপকের আলোকে শরীফের চরিত্র ব্যাখ্যা কর।
ঘ. আরিফের পরিণতি তোমার পাঠ্যপুস্তকের আলোকে বিশ্লেষণ কর।
প্রশ্নের উত্তর
ক. ইবাদত শব্দের অর্থ দাসত্ব বা আনুগত্য করা।
খ. আল্লাহর ভালোবাসা পাওয়ার জন্য আমাদের পবিত্র থাকা প্রয়োজন। ইবাদতের পূর্ব শর্ত হলো পবিত্রতা। পবিত্র না হয়ে নামায আদায় করা যায় না। পবিত্র থাকলে শরীর-মন ভালো থাকে। পড়ালেখা ও কাজকর্মে মন বসে। আল্লাহ বলেন, ‘আর উত্তমরূপে পবিত্রতা সম্পাদনকারীদের আল্লাহ তায়ালা ভালোবাসেন’ (সূরা আত্-তাওবা: ১০৮)। রাসুল (স.) বলেন, ‘পবিত্রতা ইমানের অংশ’ (মুসলিম)। তাই আমাদের পবিত্র থাকা প্রয়োজন।
গ. পাঁচ ওয়াক্ত নামাযসহ সব ধরনের ইবাদত করার চেষ্টা করায় শরীফ উত্তম চরিত্রের অধিকারী। আল্লাহর দাসত্ব ও আনুগত্যই হলো ইবাদত। আল্লাহর সব আদেশ নিষেধ মেনে চলাকে ইবাদত বলে। নামায একটি উত্তম ইবাদত। আরকান-আহকামসহ বিশেষ নিয়ম ও নির্দিষ্ট সময়ে আল্লাহর ইবাদতের নাম নামায। এটি আল্লাহর প্রতি বান্দার আনুগত্য প্রকাশের শ্রেষ্ঠ মাধ্যম। যারা আন্তরিক ও সঠিকভাবে নামাযসহ আল্লাহর ইবাদত করে তারা সব ধরনের অন্যায়-অপরাধ থেকে বিরত থাকে। আল্লাহ তায়ালা বলেন, ‘নিশ্চয়ই নামায মানুষকে অশ্লীল ও খারাপ কাজ থেকে বিরত রাখে’ (সূরা আনকাবুত: ৪৫)। আর যারা অশ্লীল ও খারাপ কাজ থেকে বিরত থাকে তারা স্বাভাবিকভাবেই উত্তম চরিত্রের অধিকারী হয়। শরীফের ক্ষেত্রে এরই ইঙ্গিত পাওয়া যায়। উদ্দীপকের শরীফ পাঁচ ওয়াক্ত নামাযসহ সব ধরনের ইবাদত করার চেষ্টা করে। এছাড়া সে তার সহপাঠী আরিফকেও বারবার নামাযের দিকে আহ্বান করে। শরীফ নামাযসহ সব ইবাদত করার চেষ্টা করায় সে উত্তম চরিত্রের অধিকারী।
ঘ. আরিফ নামাযের ব্যাপারে অবহেলা প্রদর্শন করায় তার পরিণতি হবে অত্যন্ত ভয়াবহ। আল্লাহর কাছে একজন মুসলিমের আনুগত্য প্রকাশ করার শ্রেষ্ঠ মাধ্যম নামায। ইসলামের পাঁচটি রুকনের মধ্যে নামায দ্বিতীয় গুরুত্বপূর্ণ রুকন। হাদিসে সতর্ক করে দিয়ে বলা হয়েছে, ‘যে ইচ্ছাকৃতভাবে নামায ছেড়ে ‘দিল সে কুফরি করল’ (মুসনাদে আহমাদ)। উদ্দীপকের আরিফকে তার সহপাঠী শরীফ বারবার নামাযের কথা বলে। তবে বিভিন্ন অজুহাত দেখিয়ে আরিফ নামায আদায় থেকে বিরত থাকে। অর্থাৎ নামাযের ব্যাপারে সে অবহেলা প্রদর্শন করে। এ কারণে আরিফকে পরকালে কঠিন শাস্তি পেতে হবে। মহানবি (স.) বলেন, “যে ব্যক্তি নামাযের হেফাজত করবে, কিয়ামতের দিন তার জন্য নামায নূর, দলিল ও নাজাত হবে। আর যে ব্যক্তি নামাযের হেফাজত করবে না কিয়ামতের দিন তার জন্য নামায নূর, দলিল ও নাজাত হবে না। তার হাশর হবে কারুন, ফেরাউন, হামান ও উবাই ইবনে খলফের সঙ্গে’ (আহমেদ, দারেমি)। পরিশেষে বলা যায়, নামাযে অবহেলার কারণে আরিফের পরিণতি হবে অত্যন্ত ভয়াবহ।
Source- courstika