ষষ্ঠ শ্রেণি - ইসলাম ও নৈতিক শিক্ষা (১ম অধ্যায়) সৃজনশীল প্রশ্ন
ষষ্ঠ শ্রেণির ইসলাম ও নৈতিক শিক্ষা ১ম অধ্যায় সৃজনশীল প্রশ্ন-
মেজবাহ এসএসসি পরীক্ষা দিয়ে মামার বাড়ি বেড়াতে গেল। মামা তাকে নিয়ে খুলনায় সুন্দরবনে বেড়াতে গেল। সুন্দরবনের গাছগাছালি ও সমুদ্রতীরের মনোরম দৃশ্যাবলি দেখে মেজবাহ মুগ্ধ হয়ে মামাকে বলল, কী চমৎকার সৃষ্টি! সে মামাকে প্রশ্ন করল— মামা এসব কি আল্লাহর সৃষ্টি, নাকি প্রকৃতির সৃষ্টি? মামা তাকে বুঝিয়ে বলল যে, এ পৃথিবীর সবকিছুই।আল্লাহর সৃষ্টি। চন্দ্র-সূর্য, গ্রহ-নক্ষত্র এবং পৃথিবীর গাছগাছালি, জলপ্রপাত, সমুদ্রের জলরাশি সবই একজনের সৃষ্টি।
ক. কালিমা তাইয়্যিবার অর্থ লেখ।
খ. রিসালাত বলতে কী বোঝায়? ব্যাখ্যা কর।
গ. মামার কাছে মেজবাহর প্রশ্নটি আকাইদের কোন বিষয়ের সাথে সাদৃশ্যপূর্ণ? ব্যাখ্যা কর।
ঘ. মেজবাহর মামার উত্তরটির যৌক্তিকতা ব্যাখ্যা কর।
প্রশ্নের উত্তর-
ক. আল্লাহ ছাড়া কোনো ইলাহ বা উপাস্য নেই, মুহাম্মদ (স.) আল্লাহর রাসুল।
খ. মহান আল্লাহ তায়ালার পবিত্র বাণী মানুষের কাছে পৌছে দেওয়ার দায়িত্বকে রিসালাত বলা হয়। রিসালাতের দায়িত্ব যিনি পালন করেন তাকে বলা হয় রাসুল। রিসালাত শব্দের অর্থ বার্তা, চিঠি বা সংবাদ বহন। ইসলামি আকিদায় তাওহিদের পরই রিসালাতের স্থান।আল্লাহ তায়ালা নবি-রাসুলগণকে নানা দায়িত্ব দিয়ে প্রেরণ করেছেন। যেমন— মানুষকে আল্লাহর দিকে আহ্বান করা ও ন্যায়ের পথে চালানো, সত্য দীন প্রচার করা ইত্যাদি। রাসুলদের এসব দায়িত্বকে এক কথায় রিসালাত বলা হয়।
গ. মামার কাছে মেজবাহর প্রশ্নটি আকাইদের অন্যতম বিষয় তাওহিদের সাথে সাদৃশ্যপূর্ণ।তাওহিদ অর্থ একত্ববাদ। আল্লাহ তায়ালাকে এক ও অদ্বিতীয় সত্তা হিসেবে বিশ্বাস করাকে তাওহিদ বা একত্ববাদ বলা হয়। আল্লাহ তায়ালাই একমাত্র সৃষ্টিকর্তা, পালনকর্তা, রিজিকদাতা ও সবকিছুর মালিক। তিনি ব্যতীত ইবাদতের যোগ্য কেউ
নেই। অর্থাৎ তিনিই হলেন একমাত্র ইলাহ বা উপাস্য। আল্লাহ তায়ালার প্রতি এরূপ বিশ্বাসই হলো তাওহিদ। উদ্দীপকের মেজবাহ এসএসসি পরীক্ষা দিয়ে মামার বাড়ি বেড়াতে যায়। মামা তাকে নিয়ে সুন্দরবনে বেড়াতে গেলেন। সুন্দরবনের মনোরম দৃশ্য দেখে মেজবাহ মুগ্ধ হয়ে মামার কাছে জানতে চায়, এই গাছগাছালি, সমুদ্র আল্লাহর নাকি প্রকৃতির সৃষ্টি? জবাবে মামা তাকে বলেন— এ পৃথিবীর সবকিছু আল্লাহরই সৃষ্টি। চন্দ্র-সূর্য, গ্রহ-নক্ষত্র, গাছগাছালি, সমুদ্রের জলরাশি সবই একজনের সৃষ্টি । এক আল্লাহই পৃথিবীসহ মহাবিশ্বের সবকিছু তৈরি করেছেন। কোনো কিছুই আপনা-আপনি সৃষ্টি হয়নি। এটিই তাওহিদের মূল বক্তব্য। মামার কাছে মেজবাহর প্রশ্নটি সেদিকেই ইঙ্গিত করে।
ঘ. মেজবাহর মামার ‘পৃথিবীর সবকিছুই আল্লাহর সৃষ্টি’— উক্তিটি সম্পূর্ণ যৌক্তিক। আল্লাহ তায়ালা এক ও অদ্বিতীয়। তিনি সত্তা হিসেবে যেমন একক, তেমনি গুণাবলিতেও তুলনাহীন। মহান আল্লাহর কোনো সমকক্ষ নেই। তিনি কারো সন্তান নন। আবার কেউই তাঁর সন্তান নয়। আল্লাহ সব গুণের আধার। তিনি সবকিছু সৃষ্টি করেছেন। উদ্দীপকের মেজবাহর মামার কথায় এ বিষয়টির প্রতিই ইঙ্গিত করা হয়েছে। মেজবাহ মামার সাথে সুন্দরবনে বেড়াতে গিয়ে গাছগাছালি ও সমুদ্রতীরের মনোরম দৃশ্য দেখে মুগ্ধ হয়। সে তার মামার কাছে এগুলো কার সৃষ্টি তা জানতে চায়। মামা তাকে বলেন, এ পৃথিবীর সবকিছুই আল্লাহর সৃষ্টি। চন্দ্র-সূর্য, গ্রহ-নক্ষত্র, সমুদ্রের জলরাশি সবই একজনের সৃষ্টি। মামার কথায় ইঙ্গিত পাওয়া যায়, কোনো কিছু নিজে থেকে সৃষ্টি হয়নি। একজন স্রষ্টা এগুলো সৃষ্টি করেছেন। তিনি হলেন মহান আল্লাহ। এটাই ইসলামের অন্যতম প্রধান বিশ্বাস। সুতরাং বলা যায়, মেজবাহর মামার উত্তরটি সম্পূর্ণভাবে যৌক্তিক।
Source- courstika