কাবুলিওয়ালা: রবীন্দধনাথ ঠাকুর - সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর এবং পরীক্ষার প্রস্তুতি
সপ্তম শ্রেণি - বাংলা প্রথম পত্র
কাবুলিওয়ালা: রবীন্দধনাথ ঠাকুর - সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর এবং পরীক্ষার প্রস্তুতি
উদ্দীপক-১ : নতুন দারোয়ান সামাদ মিয়ার সাথে ছেলের বেশি ভাব- বন্ধুত্ব কিছুতেই মেনে নিতে পারেন না আবীরের মা। তিনি স্বামীকে বোঝান- বিভিন্ন ফন্দি করে মানুষ এখন অন্যের বাচ্চা চুরি করে। সামাদ মিয়াও তো একদিন তেমন কিছু করে বসতে পারে।
উদ্দীপক-২ : বারো বছর আগের ছোট্ট আবীর আজ কলেজ থেকে ফেরার পথে সড়ক দুর্ঘটনায় হাসপাতালে। রক্তের জন্য বাবা-মা বিভিন্ন জায়গায় যোগাযোগ করছেন। খবর পেয়ে সামাদ মিয়া ছুটে এসে হাউমাউ করে কাঁদতে কাঁদতে বলে- ‘সাহেব, আবীর বাবার জন্য আমার সব রক্ত নেন, আমার নিজের ছেলেরে হারাইছি, ওরে হারাইলে আমি বাঁচুম না।’
ক. কাবুলিওয়ালার মলিন কাগজটিতে কী ছিল?
খ. রহমতকে কারাবরণ করতে হয়েছিল কেন?
গ. উদ্দীপক-১ অংশে কাবুলিওয়ালা’গল্পের কোন দিকটি প্রকাশ পেয়েছে? ব্যাখ্যা কর।
ঘ. ‘উদ্দীপকের সামাদ মিয়া যেন কাবুলিওয়ালা গল্পের মূল ভাবকেই ধারণ করে আছে’- বিশ্লেষণ কর।
১ নম্বর সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর
ক. কাবুলিওয়ালার মলিন কাগজটিতে ছিল একটি ছোট হাতের ছাপ।
খ. ধারের টাকা নিয়ে বচসা হওয়াকালীন সময়ে জেদের বশে কাবুলিওয়ালা লেখকের প্রতিবেশী রামপুরিকে ছুরি বসিয়ে দেয়। আর এ কারণেই তার কারাদণ্ড হয়েছিল। কাবুলিওয়ালা কলিকাতার রাস্তায় বিভিন্ন জিনিসের সওদা করত। লেখকের এক প্রতিবেশী রামপুরী চাদরের জন্য কাবুলিওয়ালার কাছ থেকে কিছু টাকা ধার নিয়েছিল। কিন্তু পরবর্তী সময় সে মিথ্যা কথা বলে ধারের কথা অস্বীকার করে। এ বিষয়ে প্রতিবেশীর সাথে ঝগড়ারত অবস্থায় কাবুলিওয়ালা তাকে ক্রোদের বশবর্তী হয়ে ছুরি বসিয়ে দেয়। এ কারণে হাকিমের আদালতে কাবুলিওয়ালার কারাদন্ড হয়েছিল।
গ. সন্তানের যেকোনো প্রকারের ক্ষতি হওয়ার আশঙ্কায় উদ্দীপক-১ ও ‘কাবুলিওয়ালা’ গল্পে সমানভাবে প্রকাশিত হয়েছে।
‘কাবুলিওয়ালা’ গল্পে কাবুলিওয়ালার ভেতরে পিতৃস্নেহ জেগে ওঠায় শিশু মিনির প্রতি এক ধরনের সখ্যতা গড়ে ওঠে। মিনি ও কাবুলিওয়ালার প্রতি কৌতুহলী হয়ে ওঠে। তাদের কথাবার্তা যোগাযোগ ও বন্ধুত্বকে লেখক প্রশধয় দিলেও মিনির মা বিষয়টি স্বাভাবিক দেখেননি। তিনি ছিলেন অত্যন্ত শঙ্কিত ভাবের লোক। কাবুলিওয়ালা সম্পর্কে তিনি নিঃসংশয় ছিলেন না। তার প্রতি দৃষ্টি রাখতে লেখককে বার বার অনুরোধ করেছেন। উদ্দীপক-১ এ দারোয়ান সামাদ মিয়ার সাথে ছেলের বেশি ভাব-বন্ধুত্ব মেনে নিতে পারেন না আবীরের মা। তিনি মনে করেন এভাবেই বিভিন্ন ফন্দি করে মানুষ অপরের বাচ্চা চুরি করে। সামাদ মিয়াও এমন কিছু করে বসতে পারে। সন্তান চিন্তায় ব্যাকুল নারী স্বামীকে একথা বোঝানোর চেষ্টা করেন। উদ্দীপকের সন্তানের ক্ষতি হওয়ার আশঙ্কার দিকটি ‘কাবুলিওয়ালা’ গল্পের মিনির মায়ের মধ্যে সমানভাবে প্রতিফলিত হয়েছে। মিনিকে নিয়ে মিনির মায়ের মনে একই দুর্ভাবনা সৃষ্টি হয়েছিল। উদ্দীপক ও কাবুলিওয়ালা’ গল্প উভয় স্থানে সন্তান চিন্তায় উদ্বিগ্ন মা শঙ্কিত হয়ে পড়েছেন।