নবম শ্রেণি - অর্থনীতি | অধ্যায় নং-৩ : সৃজনশীল নং-১
আবুল একজন সম্ভ্রান্ত কৃষক। তিনি ২০০০ টাকা দরে ২০ কুইন্টাল ধান বিক্রি করলেন। ধানের দাম বেড়ে ৩০০০ টাকা হওয়ায় তিনি আরও ৩০ কুইন্টাল ধান বিক্রি করলেন। অন্যদিকে হাবিব একজন ব্যবসায়ী। তার একটি গাড়ি কেনার শখ হলো। কিন্তু গাড়ির দাম বেশি হওয়ায় তার আর গাড়ি কিনতে ইচ্ছে হলো না।
প্রশ্ন-
ক. জোগান কাকে বলে?
খ. ভারসাম্য দাম বলতে কী বোঝায়?
গ. উদ্দীপকে আবুলের ক্ষেত্রে কোন বিধি কার্যকর হয়েছে? ব্যাখ্যা করো।
ঘ. উদ্দীপকের হাবিবের গাড়ি কেনার শখকে চাহিদা বলা যাবে কি? মতামত দাও।
উত্তর-
ক. উৎপাদক বা বিক্রেতা বিভিন্ন দামে দ্রব্যের যে বিভিন্ন পরিমাণ বিক্রয় করতে ইচ্ছুক তাকে জোগান বলে।
খ. যে নির্দিষ্ট দামে কোনো দ্রব্যের মোট চাহিদা ও মোট জোগান সমান হয় তাকে ভারসাম্য দাম বলে।
বাজারে কোনো দ্রব্যের কেনাবেচা নিয়ে ক্রেতা ও বিক্রেতার মধ্যে দর–কষাকষি চলে। ক্রেতা স্বভাবতই সর্বনিম্ন দামে কিনতে চায়, কিন্তু বিক্রেতা সর্বোচ্চ দামে তা বিক্রি করতে আগ্রহী হয়। এ রকম দর–কষাকষির ফলে এমন একটি দামে দ্রব্যটি কেনাবেচা হয়, যেখানে তার মোট চাহিদা ও মোট জোগান সমান হয় । আর এ দামই ভারসাম্য দাম।
গ. উদ্দীপকে আবুলের ক্ষেত্রে জোগানবিধি কার্যকর হয়েছে। সাধারণত দ্রব্যের দাম বাড়লে মুনাফা বাড়ে। এ জন্য বিক্রেতা বেশি মুনাফার আশায় বেশি পরিমাণ দ্রব্যের জোগান কমিয়ে দেয়। দামের সাথে জোগানের এরূপ প্রত্যক্ষ সম্পর্ককে জোগানবিধি বলে।উদ্দীপকের আবুল ২,০০০ টাকা দরে ২০ কুইন্টাল ধান বিক্রি করেন। ধানের দাম বেড়ে ৩,০০০ টাকা হওয়ায় তিনি আরও ৩০ কুইন্টাল ধান
বিক্রি করলেন। দেখা যাচ্ছে, ধানের দাম বাড়ার কারণে বেশি মুনাফার আশায় আবুল ধানের জোগান বাড়িয়ে দিয়েছেন। এখানে দাম বাড়ার সাথে জোগানের বাড়ার পরিমাণ সমমুখী সম্পর্ক প্রকাশ পেয়েছে, যার কারণে জোগানবিধি কার্যকর হয়েছে বলা যায়।
ঘ. উদ্দীপকের হাবিবের গাড়ি কেনার শখকে চাহিদা বলা যাবে না। অর্থনীতিতে চাহিদা হতে হলে তিনটি শর্ত পূরণ করতে হয়। শর্তগুলো হলো—১. কোনো দ্রব্য পাওয়ার ইচ্ছা ২. দ্রব্যটি ক্রয়ের জন্য প্রয়োজনীয় আর্থিক সামর্থ্য এবং ৩. অর্থ ব্যয় করে দ্রব্যটি কেনার ইচ্ছা।উদ্দীপকের হাবিব একজন ধনী ব্যবসায়ী। তার একটি গাড়ি কেনার শখ হলো।
কিন্তু গাড়ির দাম খুব বেশি হওয়ায় তার আর গাড়ি কিনতে ইচ্ছে হলো না। এখানে হাবিব সাহেবের গাড়ি কেনার ইচ্ছে এবং গাড়ি কেনার জন্য প্রয়োজনীয় আর্থিক সামর্থ্য রয়েছে। কিন্তু গাড়ির দাম বেশি হওয়ার কারণে অর্থ ব্যয় করে গাড়িটি কেনার ইচ্ছা তার হয়নি।
অর্থনীতিতে চাহিদা হতে হলে চাহিদার তিনটি শর্ত একই সাথে পূরণ করতে হয়। এর কোনো একটি অনুপস্থিত থাকলে তাকে চাহিদা বলা যাবে না। হাবিব সাহেবের গাড়ি কেনার ইচ্ছা এবং গাড়ি ক্রয়ের জন্য পর্যাপ্ত অর্থ থাকলেও সেই অর্থ ব্যয় করে গাড়ি কেনার ইচ্ছা নেই। এখানে দুটি শর্ত পুরণ হলেও একটি পূরণ হয়নি। তাই হাবিব সাহেবের গাড়ি ক্রয়ের শখকে চাহিদা বলা যাবে না।
সূত্র- প্রথম আলো।