স্বাস্থ্যবিধি
প্রশ্ন : কীভাবে সংক্রামক রোগ প্রতিরোধ করা যায় তার ৫টি উপায় লিখ।
উত্তর : সংক্রামক রোগের প্রতিরোধ : সংক্রামক রোগ প্রতিরোধের ৫টি গৃহীত ব্যসস্থা নিচে দেয়া হলো-
জীবাণু : সংক্রামক রোগ জীবাণুর মাধ্যমে হয়ে থাকে। এ ক্ষেত্রে শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করা এবং রোগের জীবাণু ছড়িয়ে পড়া প্রতিরোধ করা সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ।
খাদ্য : সুষম খাদ্য গ্রহণ ও নিরাপদ পানি পানের মাধ্যমে আমরা সংক্রামক রোগ প্রতিরোধ করতে পারি। অস্বাস্থ্যকর খাবার পরিহার করেও আমরা জীবাণুমুক্ত রাখতে পারি।
পরিচ্ছন্নতা : হাত ও চারপাশ পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন ও জীবাণুমুক্ত রাখার মাধ্যমে সংক্রামক রোগ প্রতিরোধ করতে পারি। বাড়ির আশপাশে পানি জমতে পারে এমন আবর্জনা যেমন- কৌটা, টায়ার, ফুলের টব ইত্যাদি পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে হবে কারণ এগুলো ডেঙ্গি ও ম্যালেরিয়া রোগের বাহক।
* ঘরে পর্যাপ্ত আলো-বাতাসের ব্যবস্থা থাকা প্রয়োজন।
* হাঁচি-কাশির সময় টিস্যু, রুমাল বা হাত দিয়ে মুখ ঢাকা ও প্রয়োজনীয় টিকা নিয়ে রোগমুক্ত থাকতে হবে।
সুতরাং, উপরের নিয়মে রোগ প্রতিরোধ করা যেতে পারে।
প্রশ্ন : বায়ুবাহিত রোগ কী?
উত্তর : বায়ুবাহিত রোগ : যেসব রোগ যা হাঁচি-কাশি বা কথাবার্তা বলার সময় বায়ুতে জীবাণু ছড়ানোর মাধ্যমে হয়ে থাকে তাদের বায়ুবাহিত রোগ বলে। যেমন- সোয়াইন ফ্লুই, হাম, গুটিবসন্ত, যক্ষ্মা এবং ইনফ্লুয়েঞ্জা ইত্যাদি।
প্রশ্ন : সংক্রামক রোগ প্রতিকারের উপায়গুলো কী?
উত্তর : সংক্রামক রোগ প্রতিকারের উপায়গুলো দেয়া হলো :
* রোগাক্রান্ত হলে পর্যাপ্ত বিশ্রাম নিতে হবে। * পুষ্টিকর খাবার খেতে হবে। * প্রচুর পরিমাণে নিরাপদ পানি পান করতে হবে। * হালকা জ্বর হলে বা সামান্য মাথাব্যথা করলে প্রাথমিকভাবে কিছু ওষুধ গ্রহণ করলে আমরা ভালো বোধ করি। * কিন্তু যদি জ্বর ভালো না হয়, ক্রমাগত বমি হতে থাকে এবং মারাত্মক মাথাব্যথা হয় তবে আমাদের অবশ্যই ডাক্তার দেখাতে হবে।
সুতরাং, সংক্রামক রোগের প্রতিকারের জন্য উপরের ব্যবস্থাদি গ্রহণ করতে হবে।
প্রশ্ন : বয়ঃসন্ধিকালে শরীরের পরিবর্তনের কারণে দুশ্চিন্তা হলে তুমি কী করবে?
উত্তর : বয়ঃসন্ধিকাল : বয়ঃসন্ধিকাল হলো জীবনের এমন এক পর্যায় যখন আমাদের শরীর শিশু অবস্থা থেকে কিশোর অবস্থায় পৌঁছায়।
করণীয় : বয়ঃসন্ধিকালে ছেলে ও মেয়েদের মধ্যে শারীরিক, মানসিক ও আচরণিক পরিবর্তন হয়ে থাকে। বয়ঃসন্ধিকালে কোনো কিছু নিয়ে বিভ্রান্তি সৃষ্টি হতে পারে কিংবা আবেগের দিক থেকে বড় পরিবর্তন আসতে পারে। এ সময় অনেকেই খুব আবেগপ্রবণ হয় বা অল্পতেই হতাশ হয়ে পড়ে। আবার নতুন নতুন শারীরিক পরিবর্তন দেখে অনেকেই দুশ্চিন্তায় ভোগে। এ সময় দুশ্চিন্তা হলে আমি নিচের কাজগুলো করব।
* এ সময় পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন থাকা। * এ সময় পুষ্টিকর খাদ্য গ্রহণ করা খুবই জরুরি। * মনে রাখতে হবে বয়ঃসন্ধিকাল সবার জীবনেই আসে। এ পরিবর্তন স্বাভাবিক। এতে দুশ্চিন্তা করার বা ঘাবড়ানোর কোনো প্রয়োজন নেই।
* এ সময় কোনো কিছু নিয়ে দুশ্চিন্তা না করে মা-বাবা, শিক্ষক কিংবা বড় ভাই বা বোনের সঙ্গে পরামর্শ করতে হবে।
সুতরাং, বয়ঃসন্ধিকালে শরীরের পরিবর্তনের কারণে দুশ্চিন্তা না করে বড়দের সঙ্গে পরামর্শ করে তাদের পরামর্শ মেনে চলতে হবে এবং স্বাভাবিক জীবনযাপন করতে হবে।
প্রশ্ন : সংক্রামক রোগ কীভাবে ছড়ায় তা ব্যাখ্যা কর।
উত্তর : সংক্রামক রোগ : বিভিন্ন জীবাণু যেমন- ব্যাকটেরিয়া, ভাইরাস, ছত্রাক ইত্যাদি শরীরে প্রবেশের ফলে সৃষ্ট রোগই হলো সংক্রামক রোগ।
কারণ : সংক্রামক রোগ নানা কারণে হয়। যেমন-
* বায়ুবাহিত বিভিন্ন রোগ মেযন- সোয়াইন ফ্লু, হাম, গুটি বসন্ত, যক্ষ্মা, ইনফ্লুয়েঞ্জা ইত্যাদি বায়ুবাহতি রোগীর হাঁচি-কাশি বা কথাবার্তা বলার সময় এ রোগ হতে পারে। * ডায়রিয়া, কলেরা, জন্ডিস, আমাশয় এবং টাইফয়েড ইত্যাদির মতো পানিবাহিত রোগগুলো খুব দ্রুত দূষিত পানির মাধ্যমে সংক্রামিত হয়। * ফ্লু, ইবোলা, হাম, নিপা ভাইরাস, বার্ড ফ্লু, জিকা ভাইরাস, এইচআইভি ভাইরাসগুলো নানাভাবে মানুষের দেহে সংক্রমিত হয়। * সংক্রমিক ব্যক্তির ব্যবহৃত জিনিস যেমন- গ্লাস, প্লেট, চেয়ার, টেবিল, জামা-কাপড়, টয়লেট ইত্যাদি ব্যবহারের মাধ্যমে আমরা জীবাণু দ্বারা সংক্রমিত হতে পারি। * মশার মতো নানা পোকামাকড় বা কুকুরের মতো প্রাণীর কামড়ের মাধ্যমে কিছু রোগ ছড়াতে পারে। * আবার দূষিত খাদ্য গ্রহণ এবং দূষিত পানি পানের মাধ্যমেও সংক্রামক রোগ ছড়াতে পারে।
সুতরাং, সংক্রামক রোগের মূল কারণই হলো অসচেতনতা বা অজ্ঞানতা।
প্রশ্ন : পানি জমে থাকে এমন বস্তু যেমন- গামলা, টায়ার ইত্যাদি সরিয়ে ফেলার মাধ্যমে আমরা ডেঙ্গি বা ম্যালেরিয়া প্রতিরোধ করতে পারি। এর কারণ কী?
উত্তর : পানি জমে থাকে এমন বস্তু যেমন- গামলা, টায়ার ইত্যাদি সরিয়ে ফেলার মাধ্যমে আমরা ডেঙ্গি বা ম্যালেরিয়া প্রতিরোধ করতে পারি। কারণ পানি জমে থাকে এমন বস্তুতে এডিস ইজিপটিলাইটিস নামক মশা ডিম পাড়ে ও বংশ বিস্তার করে। এসব মশার কামড়ে আমাদের দেহে ডেঙ্গি জ্বর দেখা দেয়। এ রোগে মানুষের মৃত্যুও হতে পারে। এ ডেঙ্গি মশা পরিষ্কার পানিতে জন্মায়। ফুলের টবে বা এসিতে জমে থাকা পানিতেও এসব মশা জন্মাতে পারে।
অন্যদিকে যে কোনো বস্তু যেখানে পরিষ্কার বা ময়লা পানি জমে সেগুলোতে এনোফিলিস মশা জন্মায়। স্ত্রী অ্যানোফিলিস মশার কামড়ে আমাদের ম্যালেরিয়া জ্বর হয়। এ জ্বরে যদিও ভালো চিকিৎসা রয়েছে তারপরও এ রোগে মৃত্যু ঝুঁকি রয়েছে।
সুত্রঃ যুগান্তর ।