অধ্যায় ২: জীবকোষ ও টিস্যু পাঠ সূত্র : উদ্ভিদ ও প্রাণীকোষের প্রধান অঙ্গাণু ও তাদের কাজ
অধ্যায় ২ জীবকোষ ও টিস্যু
পাঠ সূত্র : উদ্ভিদ ও প্রাণীকোষের প্রধান অঙ্গাণু ও তাদের কাজ সৃজনশীল প্রশ্ন ১ নিচের চিত্রগুলো লক্ষ কর-
ক. অক্সিজোম কাকে বলে? ১
খ. মানুষকে হেটারোট্রফিক বলা হয় কেন? ২
গ. শ্বসনে চিত্র X-এর ভূমিকা ব্যাখ্যা কর। ৩
ঘ. চিত্র ‘Y’ ও চিত্র ‘Z’ এর সমন্বিত কার্যক্রমের মাধ্যমে উদ্ভিদ তার পরিবহন কাজ সম্পন্ন করে- বিশ্লেষণ কর। ৪ [রা. বো. ’২০]
১নং প্রশ্নের উত্তর
ক) মাইটোকন্ড্রিয়ার ক্রিস্টির গায়ে বৃন্তযুক্ত গোলাকার যে বস্তু থাকে তাকে অক্সিজোম বলে।
খ) যেসকল উদ্ভিদ সালোকসংশ্লেষণ প্রক্রিয়ায় নিজের খাদ্য নিজে তৈরি করতে পারে সেগুলো হলো অটোট্রফিক অর্থাৎ স্বভোজী। সালোকসংশ্লেষণ প্রক্রিয়ার জন্য ক্লোরোফিল অত্যাবশ্যক। মানুষের দেহে ক্লোরোফিল নেই এবং এজন্য সালোকসংশ্লেষণ প্রক্রিয়ায় নিজের খাদ্য তৈরি করতে পারে না। এজন্য মানুষকে হেটারোট্রফিক বাপরভোজী বলা হয়।
গ) উদ্দীপকে উল্লেখিত চিত্র-ঢ হলো মাইটোকন্ড্রিয়া। শ্বসনে মাইটোকন্ড্রিয়ার ভ‚মিকা অপরিসীম। নিচে তা ব্যাখ্যা করা হলো-
জীবের প্রতিটি প্রক্রিয়া পরিচালনার জন্য শক্তি প্রয়োজন। আর এ শক্তি আসে শ্বসন প্রক্রিয়ার মাধ্যমে। কাজেই শক্তি উৎপাদনের মাধ্যমে জীবের সকল জৈবিক প্রক্রিয়া সচল রাখার ক্ষেত্রে শ্বসন প্রক্রিয়ার প্রভাব অপরিসীম। আবার জীবের এ শ্বসন প্রক্রিয়া সবাত হলে তা সম্পন্ন হয় মাইটোকন্ড্রিয়নে। এ কারণে মাইটোকন্ড্রিয়নকে বলা হয় কোষের শক্তিঘর। মাইটোকন্ড্রিয়নে শ্বসনের জন্য প্রয়োজনীয় এনজাইম, কোএনজাইম ইত্যাদি থাকে।
শ্বসনের বিভিন্ন গুরুত্বপুর্ণ পর্যায় যেমন-
ক্রেবস চক্র, ইলেক্টন ট্রান্সপোর্ট সিস্টেম, অক্সিডেটিভ ফসফোরাইলেশন মাইটোকন্ড্রিয়নে সম্পন্ন হয়। তাই জীবদেহে যদি এ অঙ্গাণুটি না থাকে তবে ATP তথা শক্তি উৎপাদন সম্পূর্ণরূপে বন্ধ হয়ে যাবে। ফলে জীবদেহের সকল জৈবিক ক্রিয়াও ধীরে ধীরে থেমে যাবে।
অতএব দেখা যাচ্ছে যে, শক্তি উৎপাদনকারী শ্বসন প্রক্রিয়ায় মাইটোকন্ড্রিয়া গুরুত্বপূর্ণ ভ‚মিকা পালন করে।
ঘ) উদ্দীপকের চিত্রে ‘Y’ হলো ভেসেল যা জাইলেম টিস্যুর একটি অংশ এবং ‘Z’ হলো ফ্লোয়েম টিস্যু। জাইলেম ও ফ্লোয়েম টিস্যুর সমন্বিত কার্যক্রমের মাধ্যমে উদ্ভিদ তার পরিবহন কাজ সম্পন্ন করে।
নিচে তা বিশ্লেষণ করা হলো-
উদ্ভিদে পরিবহন বলতে মাটি থেকে শোষিত পানি ও খনিজ লবণ এবং পাতায় প্রস্তুতকৃত খাদ্যের চলাচলকে বুঝায়। আমরা জানি, জাইলেম ভেসেলের মাধ্যমে পানি এবং খনিজ লবণ উদ্ভিদের পাতায় পৌঁছায়। প্রস্বেদন টান, কৈশিক শক্তি এবং মূলজ চাপের ফলে কোষরস উদ্ভিদের পাতায় পৌঁছে যায় বলে বিজ্ঞানীরা ধারণা করেন। এভাবে পাতায় পানি পৌঁছালে সেখানে খাদ্য প্রস্তুত হয়। প্রস্তুত খাদ্য উদ্ভিদের বিভিন্ন এলাকায় পরিবহনের দায়িত্ব গ্রহণ করে ফ্লোয়েম টিস্যু। এ খাদ্য ফ্লোয়েমের সিভনলের মাধ্যমে প্রবাহিত হয়। উদ্ভিদের বিভিন্ন জৈব যৌগ ফ্লোয়েম টিস্যুর মাধ্যমে বিপরীত দিকে একই সাথে চলাচল করে। উদ্ভিদের নিচের দিকের যৌগগুলো নিচের দিকে, উপরে সংশ্লেষিত যৌগগুলো উপরের দিকে এবং উদ্ভিদের মাঝামাঝি এলাকায় সংশ্লেষিত পদার্থগুলো উপরে বা নিচে যেকোনো দিকে প্রবাহিত হয়। অর্থাৎ জাইলেম টিস্যু মাটি থেকে পানি ও খনিজ লবণ উদ্ভিদের পাতায় পরিবহন করে এবং সেখানে প্রস্তুতকৃত খাদ্য ফ্লোয়েম টিস্যুর মাধ্যমে উদ্ভিদদেহের সর্বত্র পৌঁছে যায়। এভাবেই, জাইলেম ও ফ্লোয়েম টিস্যুর সমন্বিত কার্যক্রম উদ্ভিদের পরিবহনে ভূমিকা পালন করে।