ইতালি ভ্রমণ ও খুঁটিনাটি তথ্য
ইউরোপের ইতিহাস, ঐতিহ্য ও শিল্প-সংস্কৃতির এক অনন্য তীর্থভূমি ইতালি। প্রাচীনকালে এখানে ছোট্ট জনপদ গড়ে উঠেছিল, যাকে গ্রিকরা ‘ইতালিয়া’ বলে ডাকতো। প্রাচীন সভ্যতা ও আধুনিকতার পাশাপাশি মনোরম সমুদ্র সৈকত, আলপাইন লেক, আল্পস পর্বতমালার সমন্বয়ে গঠিত ইতালি এককথায় মনোমুগ্ধকর। ভ্রমণপিপাসুদের জন্য পৃথিবীর বিভিন্ন প্রান্তের দর্শনীয় স্থানের মধ্যে এই দেশ অন্যতম আকর্ষণীয় গন্তব্য।
ইতালিতে বেড়াতে প্রতিবছর ২ কোটি পর্যটক সমাগম হয়। আত্মীয়-স্বজন, বন্ধুবান্ধব কিংবা পরিবারকে সঙ্গে নিয়ে ইতালির প্রাকৃতিক সৌন্দর্য উপভোগের জন্য বাংলাদেশ থেকে আসতে পারেন যে কেউ। ইউরোপের অনন্য সুন্দর দেশটিতে কীভাবে আসবেন, কোথায় থাকবেন ও খাবেন, কী কী দেখবেন সেসব বিষয়ে কিছু ধারণা দেওয়া হলো এখানে।
কীভাবে আসবেন
সব ধরনের বিদেশ ভ্রমণের জন্য প্রথম শর্ত হলো বৈধ ভিসা। ইতালি ভ্রমণের শেনজেন ভিসা পাওয়া গেলে ইউরোপীয় ইউনিয়নভুক্ত আরও ২৫টি দেশ ঘোরা যায়। এজন্য প্রথমেই ঢাকার ইতালিয়ান দূতাবাস থেকে ট্যুরিস্ট ভিসা সংগ্রহ করতে হবে। এরপর সরাসরি বিমানে চড়ে মোনালিসা চিত্রকর্মের স্রষ্টা লিওনার্দো দা ভিঞ্চির দেশে বেড়াতে চলে আসুন!
ইতালি দূতাবাসের ঠিকানা-
প্লট নং-২/৩, রোড নং-৭৪/৭৯,গুলশান-২, ঢাকা-১২১২। ফোন: +৮৮-০২-৮৮৩২৭৮১-৩। ওয়েবসাইট: www.ambdhaka.esteri.it।
ভিসার প্রক্রিয়া
যেকোনও পাসপোর্টধারী শেনজেন ভিসার জন্য আবেদন করতে পারে। ভিসা প্রক্রিয়া সম্পন্ন করতে খুব বেশি সময় লাগে না। ঢাকাসহ সারাদেশে অনেক প্রতিষ্ঠান আছে, যারা ইতালির ভ্রমণ ভিসা প্রক্রিয়া সম্পন্ন করে থাকে। এছাড়া কেউ চাইলে অনলাইনে নিজেই ভিসার আবেদন করতে পারেন।
ভিসার জন্য যোগাযোগের ঠিকানা:
ইতালি ভিসা ও লিগালাইজেশন আবেদন কেন্দ্র, এজে হাইটস (নিচতলা), চ-৭২/১/ডি, প্রগতি সরণি, উত্তর বাড্ডা, ঢাকা-১২১২। হেল্পলাইন: (+৮৮)০৯৬০৬৭৭৭৬৬৬, (+৮৮)০৯৬৬৬৯১১৩৮৪ (মোবাইল ফোন ব্যবহারকারীদের জন্য)। রবি থেকে বৃহস্পতিবার সকাল ৯টা থেকে বিকাল ৫টা। রমজান মাসে সকাল ৯টা থেকে বিকাল ৩টা। ইমেল: info.itbd@vfshelpline.com। ওয়েবসাইট: http://www.vfsglobal-it-bd.com।
প্রয়োজনীয় কাগজপত্র
ভিসা প্রাপ্তির মূল শর্ত হলো সঠিকভাবে আবেদনপত্র পূরণ। ঢাকার ইতালি দূতাবাসের অনলাইনে আবেদনপত্র ডাউনলোড করতে পারবেন। ভিসার জন্য মূল পাসপোর্টের পরিষ্কার ফটোকপি, জাতীয় পরিচয়পত্র, সদ্য তোলা সাদা ব্যাকগ্রাউন্ডের চার কপি রঙিন পাসপোর্ট সাইজের ছবি, ট্রেড লাইসেন্স, বাড়ির বিদ্যুৎ/পানি/গ্যাস বিলের মূলকপি ও ফটোকপি, ছয় মাসের ব্যাংক স্টেটমেন্ট, সদ্য দম্পতির জন্য ম্যারেজ সার্টিফিকেট, সন্তানদের ক্ষেত্রে জন্মনিবন্ধন ও বাবা-মা উভয়ের স্বাক্ষরসহ পাসপোর্টের ফটোকপি থাকতে হবে।
কেউ যদি আগে শেনজেন ভিসা পেয়ে থাকেন তাহলে অবশ্যই এর ফটোকপি জমা দিতে হবে। ভিসার জন্য আবেদনপত্রে উল্লেখ করা সময় থেকে পাসপোর্টের মেয়াদ অন্তত ১৮০ দিন বেশি থাকা চাই। পাসপোর্টে অন্তত দুটি পেজ ফাঁকা থাকতে হবে। ভিসা ফি ৭৪৬০ টাকা। ৬ থেকে ১২ বছরের শিশুদের ক্ষেত্রে ভিসা ফি ৫২১০ টাকা। সর্বোপরি আবেদনপত্র সঠিক ও যথাযথভাবে পূরণ করতে হবে। তাহলেই ভিসার আবেদন বাতিল হওয়ার আশঙ্কা থাকে না।