ষষ্ঠ শ্রেণি - ইসলাম ও নৈতিক শিক্ষা (৫ম অধ্যায়) সৃজনশীল প্রশ্ন
ষষ্ঠ শ্রেণির ইসলাম ও নৈতিক শিক্ষা ৫ম অধ্যায় সৃজনশীল প্রশ্ন
জয়পুর গ্রামে ইদানীং ছোট-খাট অনেক অপরাধ বেড়ে গেছে। চুরি, রাহাজানি, ডাকাতি, ইভটিজিং নিত্য নৈমিত্তিক ঘটনা হয়ে উঠেছে। এসব দেখে এলাকার জনাব মোস্তাফিজুর রহমান কয়েকজন যুবককে নিয়ে ‘কসবা সমাজ কল্যাণ সংঘ’ নামে একটি প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলেন। তিনি যুবকদের নিয়ে এলাকায় সচেতনতা সৃষ্টিসহ অনেক কর্মসূচি গ্রহণ করলেন। তাদের প্রতিষ্ঠানের লক্ষ্য ছিল এলাকাটিকে অপরাধমুক্ত এলাকা হিসেবে গড়ে তোলা।
ক. ‘কুতুবে হানাফিয়্যা’ কতটি মাসআলা নিয়ে রচিত হয়েছিল?
খ. আইনের শাসন কী? ব্যাখ্যা কর।
গ. জনাব মোস্তাফিজুর রহমান ইসলামের কোন সংগঠনের আদর্শে অনুপ্রাণিত হয়ে ‘কসবা সমাজ কল্যাণ সংঘ’ গঠন করেছিলেন? ব্যাখ্যা কর।
ঘ. সমাজ উন্নয়নে উদ্দীপকে উল্লেখিত সংগঠনটি প্রতিষ্ঠার তাৎপর্য ব্যাখ্যা কর।
প্রশ্নের উত্তর
ক. ‘কুতুবে হানাফিয়্যা’ ৮৩ হাজার মাসআলা নিয়ে রচিত হয়েছিল।
খ. আইন অনুযায়ী যেই শাসনব্যবস্থা পরিচালিত হয় তাকে আইনের শাসন বলে। যেকোনো দেশ বা সমাজব্যবস্থা সুন্দরভাবে পরিচালিত হওয়ার জন্য আইন প্রয়োজন। দেশের বা সমাজের সব কাজ সেই আইন অনুযায়ী সম্পাদিত হবে। আইন সবার জন্য সমানভাবে প্রয়োগ হবে। অন্যায়ের শাস্তি সবার ওপর সমানভাবে আরোপিত হবে। তাই বলা যায়, যে শাসনব্যবস্থায় আইনের ব্যত্যয় ঘটে না তাকে আইনের শাসন বলে।
গ. জনাব মোস্তাফিজুর রহমান ‘হিলফুল ফুযুল’ নামক সংগঠনের আদর্শে অনুপ্রাণিত হয়ে ‘কসবা সমাজ কল্যাণ সংঘ’ গঠন করেছিলেন। ‘হিলফুল ফুযুল’ একটি শান্তি সংঘ। ‘হিলফুল ফুযুল’ অর্থ ফুযুলদের অঙ্গীকার। জনপ্রিয় ওকাজ মেলায় জুয়া খেলাকে কেন্দ্র করে ফিজার যুদ্ধ শুরু হয় এবং দীর্ঘ পাঁচ বছর ধরে তা চলে। এতে অনেক লোকের প্রাণহানি ঘটে। মহানবি (স.) তখন তরুণ বয়সী। এ হানাহানি তাঁকে ব্যথিত করে। কীভাবে শান্তি প্রতিষ্ঠা করা যায় তা নিয়ে তিনি চিন্তা করতে লাগলেন। অবশেষে তিনি শান্তিকামী কয়েকজন যুবককে নিয়ে একটি শান্তিসংঘ গঠন করেন। এটিই ছিল ‘হিলফুল ফুযুল’। উদ্দীপকের জনাব মোস্তাফিজুর রহমান কয়েকজন যুবককে নিয়ে তাদের এলাকাকে চুরি, ডাকাতি, ইভটিজিংসহ সব ধরনের অপরাধমুক্ত এলাকা হিসেবে গড়ে তোলার জন্য ‘কসবা সমাজ কল্যাণ সংঘ’ নামে একটি সংগঠন প্রতিষ্ঠা করেন। উদ্দীপক থেকে একথা স্পষ্ট যে, ‘হিলফুল ফুযুল’ নামের ঐতিহাসিক সংগঠনের আদর্শে অনুপ্রাণিত হয়েই তিনি এটি গঠন করেন।
ঘ. সমাজ উন্নয়নে হিলফুল ফুযুলের মতো উদ্দীপকে উল্লেখিত সংগঠন তথা ‘কসবা সমাজ কল্যাণ সংঘ’ প্রতিষ্ঠার তাৎপর্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। সমাজে বিভিন্ন শ্রেণি ও মানসিকতার মানুষ বসবাস করে। তাই সুস্থভাবে বসবাসের জন্য সবাইকে নির্দিষ্ট কিছু নিয়মকানুন মেনে চলতে হয়। অন্যদিকে বিভিন্ন সামাজিক সমস্যা মোকাবেলা করতে সামাজিক সংগঠনগুলো গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। ‘কসবা সমাজ কল্যাণ সংঘ’ তেমনি একটি সংগঠন। উদ্দীপকে বর্ণিত জয়পুর গ্রামে চুরি, ডাকাতি, ইভটিজিং ইত্যাদি অপরাধ বেড়ে যাওয়ায় মোস্তাফিজুর রহমানসহ কয়েকজন যুবক এগুলো বন্ধের উদ্যোগ গ্রহণ করেন। তারা উক্ত সংঘ গঠন করে এলাকাকে অপরাধমুক্ত করার জন্য বিভিন্ন কর্মসূচি গ্রহণ করেন। তাদের এ সংগঠন এলাকার মানুষের মধ্যে সচেতনতা বৃদ্ধির মাধ্যমে অন্যায়-অপরাধ নির্মূল করতে পারে। পরিশেষে বলা যায়, সমাজের উন্নয়নে উল্লিখিত সংগঠনটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে পারে।
Source- courstika