আন্তর্জাতিক শিশু শান্তি পুরস্কারে মনোনীত একাদশের শিক্ষার্থী নূশরাত ইসলাম

আন্তর্জাতিক শিশু শান্তি পুরস্কার-২০২৪-এর জন্য মনোনীত হয়েছে বাগেরহাট জেলার মেয়ে নূশরাত ইসলাম তৃষা। সে সমাজসেবামূলক সংগঠন প্রজাপতি স্কোয়াডের প্রতিষ্ঠাতা ও সাবেক শিশু সাংবাদিক। নেদারল্যান্ডসের কিডস রাইটস ফাউন্ডেশন তাকে বাল্যবিবাহ বন্ধে কাজ করায় আন্তর্জাতিক শিশু শান্তি পুরস্কার–২০২৪–এর জন্য মনোনীত করেছে।
একাদশ শ্রেণিতে অধ্যয়নরত নূশরাত ইসলাম ১০ বছর বয়স থেকে হ্যালো ডট বিডিনিউজের শিশু সাংবাদিকতার সঙ্গে যুক্ত হয়। সেখানেই তার সাংবাদিকতা শেখা। সেখান থেকেই জেনেছে তার কী কী অধিকার আছে। তার বয়সী শিশুদের কী কী অধিকার আছে।
হ্যালোর সুবাদে নূশরাত ইউনিসেফের সঙ্গে নানা কাজে যুক্ত হয়েছিল। সে কুপিং উইথ কোভিড-১৯–এর দুটি সিরিজেও অংশ নিয়েছিল।
একসময় নূশরাত ইসলাম ভাবতে থাকে তার দেশের কন্যাশিশুরা নানা কারণে পিছিয়ে থাকে। বাল্যবিবাহ হওয়া, মেয়েদের খেলার মাঠে খেলার সুযোগ না পাওয়া ইত্যাদি বৈষম্যের শিকার হয়। অনেক পরিবারই মেয়েদের বোঝা মনে করে দ্রুত বিয়ে দিয়ে দেয়। অনেক কন্যাশিশুরা জানে না বাল্যবিবাহ না করাও তার অধিকার।
তখন নূশরাত ভাবতে থাকে তাদের মধ্যে সচেতনতা পৌঁছে দেওয়া দরকার। তবে তা তার একার পক্ষে করা সম্ভব নয়। এ জন্য তার একটি দলের প্রয়োজন। ২০২৩ সালের ২ জানুয়ারি সে প্রজাপতি স্কোয়াড নামের একটি সংগঠন তৈরি করে। তার দল প্রত্যন্ত অঞ্চলের স্কুলে ঘুরে ঘুরে বাল্যবিবাহের কুফল, বাল্যবিবাহ বন্ধে কী করণীয়, তা নিয়ে শিশুদের সচেতন করে। তারা শিশুদের জানায় বাল্যবিবাহ না করা প্রত্যেক শিশুর অধিকার। তার বিশ্বাস, দেশকে আরও সামনের দিকে এগিয়ে নিয়ে যেতে শিশুদের প্রাপ্য অধিকারের সঙ্গে বড় হতে দিতে হবে।
নূশরাত ইসলাম একজন প্রভাবশালী একাদশের শিক্ষার্থী, যিনি আন্তর্জাতিক শিশু শান্তি পুরস্কারের জন্য মনোনীত হয়েছেন। তার এই অর্জন বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য কারণ এটি শিশুদের অধিকার এবং শান্তির প্রচারের জন্য তার অবদানের স্বীকৃতি।
### নূশরাতের কার্যক্রম:
- **শান্তির প্রচার**: তিনি শিশুদের মধ্যে শান্তির বার্তা ছড়িয়ে দেওয়ার জন্য বিভিন্ন কার্যক্রমে জড়িত।
- **সামাজিক উদ্যোগ**: নূশরাত সমাজের জন্য বিভিন্ন উন্নয়নমূলক প্রকল্পে কাজ করছে, বিশেষ করে শিক্ষা ও স্বাস্থ্য খাতে।
- **মোর্চা তৈরি**: তার উদ্যোগে নানান সচেতনতা মূলক ক্যাম্পেইন পরিচালিত হয়েছে, যা শিশুদের অধিকার এবং নিরাপত্তা নিয়ে কাজ করে।
### পুরস্কারের গুরুত্ব:
এই পুরস্কার তাকে আরো বেশি মানুষের কাছে পৌঁছানোর সুযোগ দেবে এবং শিশুদের অধিকার নিয়ে কাজ করার জন্য উৎসাহিত করবে।
নূশরাত ইসলাম আমাদের কাছে একটি উদাহরণ, যে কিভাবে একজন তরুণ শান্তি ও সমৃদ্ধির জন্য কাজ করতে পারে। তার এই অর্জন অন্যান্য যুবকদের জন্যও অনুপ্রেরণা হতে পারে।