মালয়েশিয়া দেশটিতে দর্শনীয় স্থান কিন্তু কম নয়।বিভিন্ন দেশ থেকে পর্যটকরা আসেন এই দেশের নানান জায়গা ঘুরতে।
দেশটির রাস্তা থেকে শুরুতে করে প্রত্যেকটি স্থাপনা যেনো পর্যটকদের আকর্ষণ করার জন্যই তৈরি করা হয়েছে।
ভ্রমণ প্রিয় মানুষদের পছন্দের দেশের তালিকায় মালয়েশিয়ার নাম থাকে প্রথমে।প্রতিবছর বাংলাদেশ থেকে প্রচুর পর্যটক মালয়েশিয়া ভ্রমণ করতে যায়।
তাহলে চলুন ভ্রমণ এর আগে মালয়েশিয়ার কয়েকটি মনোমুগ্ধকর জায়গা সম্পর্কে জানা যাক।
১.লেগোল্যান্ড থিম পার্ক: লেগোল্যান্ড থিম পার্ক চালু করা হয় ২০১২ সালের ১৫ সেপ্টেম্বর।সাধারণত শিশুদের কল্পনাকে এক ধরনের বাস্তব রূপ দেওয়া হয় এই পার্কে।
এই থিম পার্কটিতে কিছু বিভাগ ভিত্তিক দর্শনীয় স্থান রয়েছে।মিনি ল্যান্ড বিভাগ হলো এই লেগো ল্যান্ড এর কেন্দ্র।এখানে রয়েছে এশিয়ার ১৭টি দেশের বিখ্যাত সব রেপ্লিকা স্থাপনা।
এদের মধ্যে অন্যতম হলো পেট্রোনাস টুইন টাওয়ার, তাজমহল ইত্যাদি।এর পর্যবেক্ষণ টাওয়ার টি থেকে এই লেগো ল্যান্ড ও এর সংযুক্ত এলাকার সুদূর প্রসারিত দৃশ্য আকর্ষণ করা যায়।
২. বাটু কেভস:এটি মালয়েশিয়ার কুয়ালালামপুর থেকে প্রায় ১৩ কিলোমিটার উত্তরে অবস্থিত। এখানে তিনটি বৃহৎ আকার এবং বেশ কয়েকটি ক্ষুদ্রাকার গুহা রয়েছে।এখানে সবচেয়ে বড় যে গুহাটি, সেটির নাম হচ্ছে মন্দির গুহা।
এখানে রয়েছে বাটু কেভস।অর্থাৎ শ্রী সুভ্রমানিয়ার মন্দির হলো প্রভু মুরুগান এর প্রতি উৎসর্গকৃত হিন্দু মঠ। পূণ্যার্থীদের সেই মন্দিরে পৌঁছাতে ২৭২ ধাপ সিড়ি বেয়ে উপরে উঠতে হয়।
৩. তামান নেগারা: এখানে বৃহৎ আকার গাছের পাশাপাশি রয়েছে বড় বড় ঝর্ণা ও জলপ্রপাত। আরো রয়েছে জঙ্গলের মনোরম পরিবেশ।
এশিয়া থেকে বিলুপ্তপ্রায় প্রাণীদের জন্য তামান নেগারা কে বলা হয় সর্গ।এদের মধ্যে এশিয়ান হাতি,বাঘ ও গন্ডার উল্লেখযোগ্য।কিন্তু সংখ্যায় কম হওয়াতে তাদের বেশি দেখা যায় না।
৪. মাউন্ট কিনাবালু:এটি দক্ষিণ পূর্ব এশিয়ার বর্নীয় দ্বীপে অবস্থিত সর্বোচ্চ পর্বত।যার উচ্চতা ৪০৯৫ মিটার।এটি মালয়েশিয়ার সর্বোচ্চ পর্বত।
এই পর্বত এবং এর আসে পাশের বেশ কিছু এলাকা নিয়ে সংরক্ষিত কিনাবালু পার্কটি মালয়েশিয়ার প্রথম ওয়ার্ল্ড হেরিটেজ সাইট।রহস্যময় এই মাউন্ট কিনাবালু মেঘের মধ্যে আবৃত থাকে।
কিন্তু যে মৌসুমী হোক না কেন পর্বতশৃঙ্গটি শান্তি ও নির্মলতাকে আহবান জানায়।এর তাজা শীতল বায়ু ভ্রমনার্থিদের যেন প্রাণবন্ত করে তুলে।
৫.পারহেন্টিয়ান আইসল্যান্ড: পর্যটন ভিত্তিক পারহেন্টিয়ান আইসল্যান্ড মালয়েশিয়ার একটি অন্যতম সুন্দর দ্বীপ। এই সমগ্র দ্বীপটির আয়তন ১৫.৩৫ বর্গকিলোমিটার।
এখানের নীল জলরাশিতে আপনি মন ভরে সাঁতার কাটতে পারবেন।এছাড়া অধিকাংশ সমুদ্র সৈকতে বিভিন্ন সামুদ্রিক প্রাণী দেখতে পারবেন।পানির নিচের অ্যাডভেঞ্চার যারা পছন্দ করেন তারা অবশ্যই এইখানে সেই সুবিধা পাবেন।
৬.লংকাউই: এটি মালেশিয়ার উত্তর-পশ্চিম দিকে অবস্থিত। প্রায় ৯২ টি দ্বীপ নিয়ে লংকাউই দ্বীপপুঞ্জ গঠিত।এইখানে রয়েছে ছবির মতই সুন্দর সৈকত, ম্যানগ্রোভ ফরেস্ট ও পর্বতমালা।
সম্প্রতি এখানে পর্যটকদের জন্য অসংখ্য হোটেল, রেস্টুরেন্ট ও অন্যান্য সুযোগ সুবিধার ব্যাবস্থা করা হয়েছে।এই দ্বীপ এর অপরূপ সৌন্দর্য উপভোগ করার জন্য অনেক পর্যটক প্রতিনিয়ত এখানে ভিড় করছে।
৭.পেনাং:এটি মালয়েশিয়ার প্রধান এবং এশিয়ার বিখ্যাত একটি দ্বীপ।নীল জলরাশি, পাহাড় ও বিশাল সেতুর বন্ধনে ঘেরা পেনাং মূলত গভীর সমুদ্রের মাঝে বিশাল একটি দ্বীপ।
এখানে আমদানি পণ্য খালাস করা হয়।চমৎকার একটি সেতু রয়েছে এখানে।এছাড়া এই পেনাং বন্দরের কাছে চমৎকার স্থাপত্যের একটি মসজিদ রয়েছে।এখানে সব জায়গায় দেখার মত।
৮. ইশতানা বুদায়া: মালয়েশিয়ার জাতীয় থিয়েটার ইশতানা বুদায়া বা সংস্কৃতির প্রাসাদ হলো পর্যটন স্থান। জাতীয় বিভিন্ন সঙ্গীতানুষ্ঠান সাংস্কৃতিক বিনোদনের আয়োজন এখানে করা হয়ে থাকে।
ন্যাশনাল আর্ট গ্যালারি এর পরেই ইশতানা বুদায়া থিয়েটার টি বিশ্বের অন্যতম সৃষ্ট ১০ টি অত্যাধুনিক থিয়েটারের মধ্যে একটি হিসেবে তালিকাভুক্ত হয়েছে।
৯.পেট্রোনাস টুইন টাওয়ার: কোয়লালামপুরে অবস্থিত
এই পেট্রোনাস টুইন টাওয়ারের উচ্চতা ৪৫২ মিটার।পেট্রোনাস টুইন টাওয়ারে ৪১ এবং ৪২ তম ফ্লোর থেকে দুটি টাওয়ার এর মধ্যে একটি সংযোগ সেতু রয়েছে।যেটির নাম SKYBRIDGE । ৫০ রিঙ্গিত অথবা ১২০০ টাকার বিনিময়ে একজন দর্শনার্থী উঠতে পারবে এই SKYBRIDGE এ।
১০. মুলু কেভস: মালয়েশিয়ার পর্যটকদের কাছে সবচেয়ে দর্শনীয় এবং আকর্ষণীয় স্থান হচ্ছে মুলু কেভস।মূলত এটি একটি গুহা।
অবিশ্বাস্য এই পার্কটি অনেকগুলো গুহা দ্বারা ঘেরা রয়েছে।
অসম্ভব সুন্দর এই দেশটির এসব স্থান গুলো দেখার জন্য এবং ক্যামেরা বন্দি করার জন্য প্রত্যেক দেশ থেকে প্রতিনিয়ত ও অসংখ্য ভ্রমণকারীরা ভ্রমণ করছে এই দেশে।